‘হাওয়া’ সিনেমার বিরুদ্ধে আইন ভঙ্গের অভিযোগ
মেজবাউর রহমান সুমন পরিচালিত সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘হাওয়া’ সিনেমাটির বিরুদ্ধে বন্যপ্রাণী আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। পরিবেশবিদরা বলছেন, সিনেমাটিতে আইন ভেঙে খাঁচায় বন্যপ্রাণী প্রদর্শন ও হত্যার দৃশ্য রয়েছে, যা সংশ্লিষ্ট আইনের লঙ্ঘন। এ নিয়ে সিনেমাটির বিরুদ্ধে আইনি জটিলতায় পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সিনেমার একাধিক দর্শক জানান, সিনেমাটির একটি দৃশ্যে একটি পাখি হত্যা করে চিবিয়ে খেয়েছেন অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। দৃশ্যের বিবরণ দিতে গিয়ে তারা বলেন, মাছ ধরা বোট নয়নতারার সরদার চান মাঝি একটা পাখি পোষে। এক সময় সমুদ্রে পথ হারিয়ে চান মাঝি এই শালিককে উড়িয়ে দেয়। কিন্তু পাখিটি কিছুদূর দিয়ে আবার ফিরে আসে। এরপর সিনেমার চান মাঝি পাখিটিকে হত্যা করে পুড়িয়ে চিবিয়ে চিবিয়ে পাখিটির হাড়মাংস খান। সিনেমাটির এমন দৃশ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে। অনেকে এর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থারও দাবি জানান।
পরিবেশবিদরা বলছেন, এমন দৃশ্য বন্যপ্রাণী আইনের সরাসরি লঙ্ঘন। এরই মধ্যে এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট। বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিচালক মো. ছানাউল্যা পাটওয়ারী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, বিভিন্ন গণমাধ্যম ও দর্শকদের রিভিউ থেকে তারা জানতে পেরেছেন ‘হাওয়া’ চলচ্চিত্রে বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ লঙ্ঘন করা হয়েছে। তাই ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে তারা তদন্ত শুরু করেছেন। অভিযোগের সত্যতা পেলে আইন অনুযায়ী পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে।
এ প্রসঙ্গে সিনেমাটির নির্মাতা মেজবাউর রহমান সুমন বলেন, এটা তো ফিকশন ঘরানার সিনেমা। আর সিনেমার শুরুতেই তো সকল কিছুর বর্ণনা দেওয়া আছে। বন্যপ্রাণী আইন-২০১২ লঙ্ঘন করার কোনো কাজ করিনি। চঞ্চল চৌধুরী যেটা খেয়েছে, সেটা ছিল পোড়া মুরগি। যেটাকে সাধারণত আমরা বারবিকিউ বলি।
গত শুক্রবার (২৯ জুলাই) দেশের ২৪টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে ‘হাওয়া’। সিনেমাটি স্টার সিনেপ্লেক্সের পাঁচটি শাখায় প্রতিদিন চলছে ২৬ শো, যা সাম্প্রতিক সময়ের বাংলা সিনেমার ক্ষেত্রে রেকর্ড বলছে স্টার কর্তৃপক্ষ। রাজধানীর ব্লকবাস্টার সিনেমাতে ‘হাওয়া’র দৈনিক ১৩টি শো থাকছে। এ সিনেমায় অভিনয় করেছেন চঞ্চল চৌধুরী, নাজিফা তুষি, শরিফুল রাজ, সুমন আনোয়ার, নাসির উদ্দিন খান, সোহেল মণ্ডল, রিজভী রিজু, মাহমুদ হাসান ও বাবলু বোস।
এর আগে, ‘শেষ গল্পটা তুমিই’ নাটকে খাঁচায় টিয়া পাখি বন্দি অবস্থায় দেখানো হয়। নাটকটি প্রচারের দীর্ঘ কয়েকমাস পর সম্প্রতি মাত্র ৫০ সেকেন্ডের একটি দৃশ্যের জন্য নির্মাতা অনন্য ইমনের বিরুদ্ধে ১৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা দায়ের করে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের ‘বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট’।
এ মামলায় সোমবার (১ আগস্ট) ঢাকার সিএমএম আদালতে জামিনের আবেদন করেন নির্মাতা অনন্য ইমন। বিচারক তামান্না ফারাহ এক শুনানি শেষে জামিনের আদেশ দেন। নাটকটিতে অভিনয় করেছিলেন জনপ্রিয় অভিনেতা তৌসিফ মাহবুব ও অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণ। উল্লেখ্য, এর আগেও বেশ কয়েকটি নাটক ও বিজ্ঞাপনে দেখানো দৃশ্য নিয়ে মামলা হয়েছে। মামলা করে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের ‘বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট’।